আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির খবর বর্তমান সরকারের বলে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, রেলের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কেনাকাটায় ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, এটি রেলের কেনাকাটায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতির চিত্র। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৬ অক্টোবর ‘Sheikh Abdullah’ নামক একটি আইডি থেকে ফটোকার্ডটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “আওয়ামী লীগের আমলে বালিশ, পর্দাসহ এমন অনেক কাণ্ড শুনেছি; আর ইনুসের আমলে নতুন সংযোজন-- ১। তালা ২। বালতি ৩। বাঁশি ৪। ঝাড়ু "বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা; কিন্তু সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। ২৬০ টাকার বালতি কেনা হয়েছে ১ হাজার ৮৯০ টাকায়, ৬৫ টাকার বাঁশির জন্য দেওয়া হয়েছে ৪১৫ টাকা, আর ৯৮ টাকার ঝাড়ু কেনা হয়েছে ১ হাজার ৪৪০ টাকায়। পশ্চিম রেলের কেনাকাটায় এমন ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। যুগান্তরের ফটোকার্ড প্রচার করে সেটি বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে। যেখানে মূল প্রতিবেদনে দুর্নীতির যেই সময়কার উল্লেখ করা হয়েছে তা গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের, বর্তমান সরকারের সময়কার নয়।
কি ওয়ার্ড সার্চ করে “১৭৩ টাকার তালা কেনা হয়েছে ৫৫৯০ টাকায়” শিরোনামে ‘যুগান্তর’ এর ফেসবুক পেইজে একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয় যায়। গত ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত ফটোকার্ডের সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডের মিল পাওয়া যায়। যেই ফটোকার্ডের কমেন্টে একই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, বাজারে একটি তালার দাম ১৭৩ টাকা, কিন্তু সেটি কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৫৯০ টাকায়। ২৬০ টাকার বালতি কেনা হয়েছে ১ হাজার ৮৯০ টাকায়, ৬৫ টাকার বাঁশির জন্য দেওয়া হয়েছে ৪১৫ টাকা, আর ৯৮ টাকার ঝাড়ু কেনা হয়েছে ১ হাজার ৪৪০ টাকায়। পশ্চিম রেলের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কেনাকাটায় এমন ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য প্রতিবেদনে এই ঘটনার সঙ্গে কোথাও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকর্তার ব্যাপারে কোনো তথ্য উল্লেখ করা নেই।
অর্থাৎ আলোচ্য ফটোকার্ডটি ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। বরং এটি গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সময়কার, যখন শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল।
সুতরাং আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির তথ্য বর্তমান সরকারের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




