মুসলিম কন্যাশিশুর মৃত্যুর ঘটনাকে হিন্দু কন্যা হত্যাকাণ্ড দাবিতে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, মৃত কন্যাশিশুটি একজন মুসলিম। তার নাম রোজা মনি ও তার বাবার নাম মোহাম্মদ সুমন মিয়া।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি কন্যাশিশুর ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে একজন হিন্দু কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৭ জুলাই ‘বিশ্ব হিন্দু সমাচার’ নামক ফেসবুক একাউন্ট থেকে ছবিটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশে আরো একটি মর্মান্তিক হিন্দুহত্যার ঘটনা। ফুটফুটে এই বাচ্চা মেয়েটা ৫ দিন যাবত নিখোঁজের পর গতকাল তার অর্ধগলিত দেহ পাওয়া গেছে বাড়ির পাসের একটি পাট ক্ষেতে। বাবা মা স্পষ্ট বলে দিয়েছিল দরকার হলে বাড়ি বিক্রি করে দিবে যদি কেউ যদি সন্ধান দিতে পারে, কতটা নির্মম গ্রাম : চরমারিয়া, কিশোরগঞ্জ সদর | বাবা মা পরিবারকে শোক সইবার শক্তি দান করুন|#viralpost2025#Người।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে মৃত কন্যাশিশুটি হিন্দু ধর্মের নয় বরং সে মুসলিম ধর্মের। তার নাম রোজা মনি ও তার বাবার নাম মোহাম্মদ সুমন মিয়া।
ভাইরাল ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পাঁচদিন পর পাটক্ষেতে পাওয়া গেল শিশুর অর্ধগলিত লাশ” শিরোনামে ‘ইনকিলাব’ পত্রিকার অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ১১ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে ফেসবুকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ভাইরাল ছবিটির মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর রোজা মনি (৬) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রোজা মনি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের চর মারিয়া গ্রামের মোহাম্মদ সুমন মিয়ার মেয়ে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড কি-না জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য প্রতিবেদনের সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড সার্চ করে “কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ৫ দিন পর পাটখেত থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার” শিরোনামে ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় আরো একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে বলা হয়, কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর বাড়ির পাশের পাটখেত থেকে রোজামনি (৬) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রোজামনি সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের চরমারিয়া গ্রামের মোহাম্মদ সুমন মিয়ার মেয়ে। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য প্রতিবেদন দুটিতে মৃত মেয়ে ও তার পরিবারের নাম-পরিচয় মুসলিম নামের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তার পরিচয়ের ক্ষেত্রে কোথাও হিন্দু সংশ্লিষ্টতা নেই।
অর্থাৎ মৃত কন্যাশিশুটি মুসলিম ধর্মের। হিন্দু ধর্মের নয়।
সুতরাং মুসলিম কন্যাশিশুর মৃত্যের ব্যাপারটি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।