শিশু আয়াত হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এখনো রায় দেননি আদালত
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, শিরোনামে শিশু আয়াতের খুনী আবিরকে আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বলা হলেও খবরের বিষয়বস্তু ভিন্ন।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে, চট্টগ্রামের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত (৫) হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আবির আলীকে আদলত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড প্রদানের খবর দেয়া হচ্ছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৪ ডিসেম্বর 'Media Bengali' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে অখ্যাত একটি অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে লেখা হয়, "#মাত্র_পাওয়া আয়াতের হত্যাকারী আবির এর মৃত্যুদন্ড ঘোষণা আদালত!"। স্ক্রিনশট দেখুন--
খবরের বিষয়বস্তুতে লেখা হয়েছে, "চট্টগ্রামের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত (৫) হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আবির আলীর মা আলো বেগম ও বাবা আজমল আলীকে তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।" খবরের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্টচেক
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, শিরোনামে করা দাবিটি ভিত্তিহীন আর বিস্তারিত অংশের বিষয়বস্তুর খবরটিও ভিন্ন।
কি ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর দেখা গেছে, অখ্যাত অনলাইন পোর্টালের খবরের বিষয়বস্তু বাংলা ট্রিবিউনের ভিন্ন একটি খবর থেকে কপি করা। গত ২ ডিসেম্বর অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনে "রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে আবিরের মা-বাবা" শিরোনামে প্রকাশিত ঐ খবরে বলা হয়েছে, "চট্টগ্রামের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত (৫) হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আবির আলীর মা আলো বেগম ও বাবা আজমল আলীকে তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুই দিনের রিমান্ড শেষে আবিরের বোন আঁখি আকতারকে (১৫) আদালতে সোপর্দ করা হয়। বয়স কম হওয়ায় আদালত তাকে ভিকটিম সাপোর্ট কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন।" স্ক্রিনশট দেখুন--
মূলত বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটিকেই হুবহু কপি করে আলোচ্য অনলাইন পোর্টালতে প্রকাশ করা হয়েছে। অনলাইন পোর্টালের খবর ও মূল খবরের পাশাপাশি স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ অখ্যাত পোর্টালে প্রকাশিত খবরের শিরোনামের সাথে বিষয়বস্তু সামঞ্জস্যহীন। খবরটির শিরোনামে এক ধরনের তথ্য দেয়া হলেও খবরে বিস্তারিত অংশে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে মাদ্রাসায় পড়তে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার সোহেল রানার মেয়ে আলিনা ইসলাম আয়াত। নিখোঁজের ১০ দিন পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, তাদের আদরের পাঁচ বছরের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং হত্যা করে ছয় টুকরো করা হয়। এই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বশেষ অনুযায়ী, এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আবির আলী সহ তার মা-বাবাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তবে এখনো উক্ত মামলার বিচারকার্য শুরু হয়নি এবং কোনো রায় ঘোষণা করা হয়নি।
সুতরাং চটকদার শিরোনাম দিয়ে বিস্তারিত অংশে ভিন্ন তথ্য উল্লেখ করে পুরোনো খবর কপি করে একাধিক অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।