জুতা চুরি নিয়ে জামায়াত কর্মীকে জড়িয়ে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার
আলোচ্য ফটোকার্ডটি তাদের বানানো নয় বলে বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছে ডেইলি ক্যাম্পাস।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে শিক্ষাঙ্গন ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ থেকে জুতা চুরির অভিযোগে জামায়াত কর্মীকে গণধোলাই দেওয়া হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৫ মে 'ভোলার ছেলে মারুফ হাওলাদার' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ফটোকার্ডটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, "১৯৭১-২০২৪ লুটপাট করেছে এখন মসজিদের জুতা চুরি করে তাতে কি।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ফটোকার্ডটি নকল। ক্যাম্পাস ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের একটি ফটোকার্ডকে এডিট করে আলোচ্য ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, আলোচ্য ফটোকার্ডটি তাদের বানানো নয় বলে বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন অনলাইন পত্রিকাটির সম্পাদক মাহবুব রনি।
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করে আলোচ্য দাবির প্রেক্ষিতে কোনো প্রতিবেদন ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এমনকি নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে, ভাইরাল ফটোকার্ডে উল্লিখিত সময়ের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০ মে একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যেই ফটোকার্ডের সঙ্গে ভাইরাল ফটোকার্ডের মিল পাওয়া যায়। যদিও ওই ফটোকার্ডে উল্লেখ করা হয়, “জবির মসজিদে জুতা চুরির অভিযোগে তরুণকে গণধোলাই”। সেখানে ‘জামায়াত কর্মী’ শব্দদ্বয় উল্লেখ নেই।
নিচে ভাইরাল ফটোকার্ড (বামে) ও ডেইলি ক্যাম্পাসের ফেসবুকে প্রকাশিত ফটোর্ডের (ডানে) মধ্যে সমঞ্জসতা দেখুন পাশাপাশি--
এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “জবির মসজিদে জুতা চুরির অভিযোগে তরুণকে গণধোলাই” শিরোনামে ‘ডেইলি ক্যাম্পাসের’ ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুতা চুরির অভিযোগে এক তরুণকে আটক করা হয়েছে। বুধবার (২০ মে) মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. শফিকের নজরে এলে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নেওয়া হয়। যদিও প্রতিবেদনের কোথাও অভিযুক্ত ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ নেই। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে আলোচ্য ফটোকার্ডটি সম্পর্কে জানতে চাইলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বুম বাংলাদেশকে জানান, ‘এটি ফেক’।
অর্থাৎ আলোচ্য ফটোকার্ডটি ফেক। ডেইলি ক্যাম্পাস এমন কোনো ফটোকার্ড বানায়নি।
সুতরাং ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে ডেইলি ক্যাম্পাসের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।