BOOM Bangladesh
  • ফেক নিউজ
  • ফ্যাক্ট ফাইল
  • শরীর স্বাস্থ্য
  • Home-icon
    Home
  • Authors-icon
    Authors
  • Contact Us-icon
    Contact Us
  • Correction Policy-icon
    Correction Policy
  • ফেক নিউজ-icon
    ফেক নিউজ
  • ফ্যাক্ট ফাইল-icon
    ফ্যাক্ট ফাইল
  • শরীর স্বাস্থ্য-icon
    শরীর স্বাস্থ্য
  • Home
  • ফেক নিউজ
  • বাংলাকে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয়...
ফেক নিউজ

বাংলাকে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় সরকারি বা রাষ্ট্রভাষা করা হয়নি

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, বাংলা সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় সরকারি বা রাষ্ট্রভাষা নয়। দেশটির একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ইংরেজি।

By - Tausif Akbar |
Published -  29 Sept 2024 11:27 PM IST
  • বাংলাকে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় সরকারি বা রাষ্ট্রভাষা করা হয়নি

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে টেক্সট, ছবি বা ভিডিও ফরম্যাটে পোস্ট করে বলা হয়েছে; আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা/ দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা/ দাপ্তরিক ভাষা বাংলা। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।

    গত ২৬ আগস্ট 'Tarek Midday' নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এই বিষয়ে একটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "একটা ছোট জানা। ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়া আর একটা দেশের সরকারি ভাষা বাংলা! !আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওন,সরকারি ভাষা বাংলা। বড়‌ই গর্বের বিষয়"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--



    বেশ কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও খবরটি প্রচার করা হয়েছে। চলতি বছরে গত ফেব্রুয়ারিতে এই খবরটি চ্যানেল আই ও মোহনা টিভি'তে প্রচার করা হয়েছে।

    ফ্যাক্ট চেক:

    বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। বাংলা সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় সরকারি, দাপ্তরিক কিংবা রাষ্ট্রভাষা নয়। দেশটির একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ইংরেজি। ইংরেজির পাশাপাশি দেশটির অধিকাংশ বাসিন্দারা ক্রিও ভাষা ব্যবহার করে। ক্রিও এর পাশাপাশি তারা লিম্বা, মেন্দে, এবং তেমনে সহ আরও কয়েকটি ভাষায় কথা বলে। তবে দেশটিতে কিছু মানুষ বাংলায় প্রাথমিক কিছু শব্দ কিংবা বাক্য বলতে পারে।

    বিষয়টি নিয়ে বাংলায় কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম 'নিউজ জি'-তে ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ "সিয়েরা লিওনের ২য় রাষ্ট্রভাষা বাংলা!’ তথ্যটা কতটা সত্য? নাকি অতিরঞ্জিত?" শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ পাওয়া যায়। সিয়েরা লিওনে মনোবিজ্ঞানী হিসেবে বেশ কয়েক বছর পেশাগত দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশী চিকিৎসক আকবর হোসেন এই নিবন্ধে উল্লেখ করেন, বাংলা সিয়েরা লিওনের সরকারি কিংবা রাষ্ট্রভাষা নয় (সংক্ষেপিত)। নিবন্ধটির দুইটি স্ক্রিনশটের কোলাজ দেখুন--



    আকবর হোসেনের কাছে সরাসরি জানতে চাইলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, সিয়েরা লিওনের একমাত্র সরকারি বলুন, দাপ্তরিক বলুন কিংবা একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হলো ইংরেজি। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রমের কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অনেক বছর সিয়েরা লিওনে ছিল। সহাবস্থানের ফলে সিয়েরা লিওনের বেশকিছু নাগরিক প্রাথমিকভাবে কিছু বাংলা শব্দ বা বাক্য বলতে পারে। সেনাবাহিনীর সহযোগীতার ইতিহাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে তারা বাংলাদেশী বা বাংলা ভাষার বিষয়েও আন্তরিকতা দেখায়। এই বিষয়টিই বিভিন্নভাবে বিকৃত হয়ে প্রচার হয়েছে।

    এ বিষয়ে তিনি তাঁর নিজের নেওয়া সিয়েরা লিওনের বেশ কয়েকজন নাগরিকদের সাক্ষাৎকার সম্বলিত একটি ভিডিও পাঠিয়েছেন আমাদের। ভিডিওটির প্রিভিউ দেখুন--

    পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে নাইজেরিয়ার ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা 'দুবাওয়া'-এর সিয়েরা লিওন সংস্করণের সাইটে ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ "Bengali/Bangla has never been used as Sierra Leone’s official language" শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাকে কখনই সিয়েরা লিওনের সরকারী ভাষা ঘোষণা করা হয়নি। এটি দেশের কোথাও স্বীকৃত বা কথ্য ভাষা নয় (অনূদিত ও সংক্ষেপিত)। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--



    পাশাপাশি এই ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিবেদনের অথর 'Fayia J. Moseray' এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, সিয়েরা লিওনে কখনোই বাংলাকে "সরকারি ভাষা" হিসেবে গ্রহণ বা ব্যবহার করা হয়নি।

    সিয়েরা লিওনের সাংবাদিক ও সম্পাদক 'Kemo Cham' এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই দাবিটি (সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা) সম্পূর্ণ মিথ্যা।

    সিয়েরা লিওনের আরেক সাংবাদিক 'Mohamed Jaward Nyallay' এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বাংলায় কথা বলি না এবং সিয়েরা লিওনে আমরা যে ভাষায় কথা বলি তার মধ্যেও বাংলা তালিকাভুক্ত ভাষা নয়।

    এছাড়াও সিয়েরা লিওনে কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশী এনজিও 'ব্র্যাক'। দেশটিতে ব্র্যাকের হয়ে বর্তমানে কাজ করছেন বাংলাদেশী নাগরিক মুকুল বিশ্বাস। তার কাছে জানতে চাইলে তিনিও বুম বাংলাদেশকে জানান, '১৯৯১ সালে জোসেফ মমোহ সরকারের পতনের মধ্যদিয়ে গৃহযুদ্ধ শুরু। সে বছর অক্টোবর মাসে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষীবাহিনী সিয়েরা লিওনে আসে। ২০০২ সালে ১৮ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট আহমেদ তিজান কাব্বাহ গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। জানা যায়, ২০০২ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত ৫৪ কি.মি সড়ক উদ্বোধন কালে তিনি ঘোষণা দেন "Bangla will be honorary state language of Sierra Leone". তবে তাঁর সরকার এ নিয়ে সংসদে আলোচনা বা কোনো অধ‍্যাদেশ জারি করেনি।'

    তিনি আরো জানান, '২০০৩ সালে আহমেদ তিজান কাব্বাহ বাংলাদেশ সফর করেন। গৃহযুদ্ধ পরবর্তী পুনর্বাসন, পুনর্গঠন শেষ করে ২০০৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সিয়েরা লিওন থেকে চলে যায়। আমি ঐ সময়ের SLPP সরকারের দুইজন এমপির সাথে দেখা করেছি। তারা বলেছেন ঐ সময়ের সরকার ছিল দুর্বল। ফলে প্রেসিডেন্ট তিজান কাব্বাহ বাংলাদেশ সফরের আগে ঐ ঘোষণার (আশ্বাস) দিয়েছিলেন কূটনৈতিক কারণে। কিন্তু তিনি তা বাস্তবায়ন করেননি। পরেও তা কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তিজান কাব্বাহ ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক ঝানু কুটনীতিক। ওটা ছিল আসলে তার আইওয়াশ। এটা সত্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে কাজ করতে এসে স্থানীয় লোকজন অনেকে কাজ চলার মতো বাংলা ভাষা শিখে যায়। তবে, এখানে এখন বাংলার কোন ব্যবহার নেই।'

    অর্থাৎ বাংলা সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় সরকারি, দাপ্তরিক কিংবা রাষ্ট্রভাষা নয়। দেশটির একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ইংরেজি।


    যেভাবে এই ভুল তথ্যটি ছড়িয়ে পড়ে?

    দেশীয় একটি ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, সার্চ করে আমেরিকান গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এর বাংলা সংস্করণের সাইটে ২০০২ সালের ২৭ ডিসেম্বর 'Bangla Made One of The Official Languages of Sierra Leone' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। পরের দিন (২৯ অক্টোবর) সংবাদটি প্রকাশ করে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার এবং দৈনিক জনকণ্ঠ (আর্কাইভ কপিগুলো 'সংগ্রামের নোটবুক' নামক একটি অনলাইনভিত্তিক পুরোনো সংগ্রহশালা থেকে নেওয়া হয়েছে)। সবগুলো প্রতিবেদনে বাংলাকে সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা ঘোষণা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

    এছাড়াও ২০০৩ এর জানুয়ারি বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান বলেছিলেন, সিয়েরা লিওন সরকার বাংলা ভাষাকে দেশটির একটি সরকারি ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ভৌগোলিক তথ্য সম্বলিত শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান 'ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস' সাইটেও দাবিটি প্রচারিত হয়।

    অন্যদিকে বাংলা সরকারি ভাষা এর পরিবর্তে সিয়েরা লিওনে 'অনারারি অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ' হিসেবে ঘোষণা হয়েছে এমন তথ্য সম্বলিত নিবন্ধ এবং এমন মন্তব্য সম্বলিত প্রতিবেদনও পাওয়া যায়।


    সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট আহমেদ তিজান কাব্বাহ বাংলা ভাষা নিয়ে কি কোনো ঘোষণা করেছিলেন?

    আলোচ্য দাবি সম্বলিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, তৎকালীন সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট আহমেদ তিজান কাব্বাহ বাংলা ভাষাকে 'অফিশিয়াল ল্যাংগুয়েজ' হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। বেশ পরে প্রকাশিত আরো কিছু প্রতিবেদনে এবং কিছু মন্তব্যে উল্লেখ করা হয় যে ২০০২-০৩ সালে তৎকালীন সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট আহমেদ তিজান কাব্বাহ বাংলা ভাষাকে 'অনারারি ল্যাংগুয়েজ' হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।

    এছাড়াও কিছু মন্তব্যে উল্লেখ করা হয় দেশটিতে সংঘঠিত প্রায় ১১ বছরের গৃহযুদ্ধে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে 'অনারারি ল্যাংগুয়েজ' হিসেবে ঘোষণা করার কথা বলেছিলেন যদিও দাপ্তরিকভাবে সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন (নথিভুক্ত) হয়নি।

    কিন্তু 'দুবাওয়া' এর ফ্যাক্ট-চেক রিপোর্ট বলছে, 'সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা হিসাবে 'বাংলা' ব্যবহার করার জন্য প্রয়াত রাষ্ট্রপতি কাব্বা কখনও এমন বিবৃতি বা ঘোষণা করেছিলেন তা নিশ্চিত করার জন্য কোনও তথ্য বা প্রমাণ নেই।'

    প্রতিবেদনটিতে আরো উল্লেখ করা হয়, 'দ্য ইনস্টিটিউট ফর সিয়েরা লিওনিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেস (টিআইএসএলএল) এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মি. লামিন এইচ কার্গবো বলেন, তিনি যা জানেন তা হলো প্রয়াত রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেছিলেন 'বাংলা' সিয়েরা লিওনের একটি ভাষা (লোকাল ভাষা) হিসাবে বিবেচিত হবে বা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কিন্তু তা সরকারী ভাষা হিসাবে নয়। ঘোষণাটি হওয়ার পর বাংলাকে সিয়েরা লিওনিয়ানদের ভাষা (লোকাল) হিসাবেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, বা সিয়েরা লিওনের কোনও অংশে এটি একটি ভাষা হিসাবে কথ্য নয়, তিনি বর্ণনা করেছেন।'

    এদিকে 'Fayia J. Moseray' বুম বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, 'আমি আমার একটি গবেষণায় আবিষ্কার করেছি, সিয়েরা লিওনের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি, ডক্টর আহমেদ তেজান কাব্বাহ একবার বাংলাদেশ সরকার এবং এর প্রশংসা করার সম্মানে বাংলাকে দেশের স্থানীয় ভাষার একটি অংশ হিসাবে গ্রহণ করার সুপারিশ করেছিলেন। যাইহোক, তিনি কখনই বাংলাকে দেশের অফিশিয়াল ভাষা হিসাবে উচ্চারণ করেননি কারণ, দেশে ইতিমধ্যে মিডিয়া, আদালত, শিক্ষা এবং অফিসিয়াল ব্যবহারের ভাষা হিসাবে ইংরেজি ছিল।'

    পাশাপাশি, 'অফিশিয়াল ল্যাংগুয়েজ' দাবিটি প্রথম প্রচার হবার প্রায় একবছর পরে; ২০০৩ সালের ২১ অক্টোবর তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আহমেদ তিজান কাব্বাহ বাংলাদেশে এলে সেসময়ের পত্র-পত্রিকায়ও (১, ২, ৩) এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০০৩ সালের ২৩ অক্টোবরের দৈনিক জনকন্ঠের প্রথম পাতার ছবি দেখুন--

    ছবি: সংগ্রামের নোটবুক


    এখানে উল্লেখ্য, সরকারি ভাষা হলো যা দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার হয় আর 'অনারারি ল্যাংগুয়েজ' হলো কোনো ভাষাকে সন্মান প্রদর্শন করা (বিশেষ কোনো কারণে) কিন্তু তা দাপ্তরিক কিংবা কোনো কাজে ব্যবহার করা হয়না।


    সিয়েরা লিওনের ভাষা সম্পর্কে কী জানা যায়?

    'দুবাওয়া' তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে 'ইংরেজি' সিয়েরা লিওনের একমাত্র সরকারি ভাষা (১, ২)। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০২১ এর একটি জনসংখ্যা শুমারি অনুসারে, দেশটি প্রায় ১৬ টি জাতীয় ভাষা/ কথিত ভাষা। সিয়েরা লিওনে এবং সিয়েরা লিওনিয়ানদের দ্বারা কথিত ভাষা হলো তেমনে, মেন্ডে, ক্রিও, কিসি, ফুলা, সোসো, ইয়ালুঙ্কা, কোনো, লিম্বা, শেরব্রো, লোকো এবং মাডিঙ্গো। এই ভাষাগুলো শুধুমাত্র অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন: বাড়িতে, রাস্তায়, ধর্মীয় সমাবেশে এবং অন্যান্য কাজে।

    এছাড়াও সিয়েরা লিওনের ভাষা বৈচিত্র নিয়ে; সিয়েরা লিওনের পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের নিবন্ধ, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) এর 'দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক' প্রকাশনার সিয়েরা লিওন সম্পর্কিত তথ্যে, জ্ঞানকোষ ব্রিটানিকা'র তথ্য, গবেষণাপত্র (১, ২) ও অলাভজনক সংস্থা ট্রান্সলেটরস উইথাউট বর্ডার্স এর একটি নিবন্ধ পাওয়া যায়।

    এগুলোতে উল্লেখ করা হয়, সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা ইংরেজি। তবে সরকারি ভাষা হলেও এর প্রতিনিয়ত ব্যবহার শিক্ষিতদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এটি বহুভাষিক দেশ। এখানে ১৬ থেকে ২০ ধরণের জাতিগোষ্ঠী বাস করে এবং প্রায় প্রত্যেকের আলাদা ভাষা আছে। ‘তেমনে’ এবং ‘মেন্দে’ জাতিগোষ্ঠী সবচেয়ে বড় এবং মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ। মেন্দে দক্ষিণাঞ্চলে এবং তেমনে উত্তরাঞ্চলে প্রধান কথ্য ভাষা। ক্রিও সর্বজনীন তথা দেশটির অধিকাংশ মানুষের মধ্যকার যোগাযোগের বা সাধারণ ভাষা। ক্রিও ভাষা দেশটির মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের প্রধান ভাষা হলেও ৯৫ শতাংশ মানুষ এটি বুঝতে পারে।

    এছাড়াও, নিজ গোষ্ঠীর মধ্যে তারা নিজেদের ভাষায় কথা বলে। সিয়েরা লিওনের শিশুরা সাধারণত তাদের মাতাপিতার জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, প্রতিবেশীর ভাষা, ক্রিও, এবং ইংরেজি – এই চারটি ভিন্ন ভাষা শিখে বড় হয়। অধিক প্রচলিত ভাষার মধ্যে আরেকটি হলো লিম্বা। দেশটির জাতীয় রেডিও এবং টেলিভিশনে সকল নাগরিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ঘোষণাগুলো ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি মেন্দে, তেমনে, লিম্বা ও ক্রিও'তে তথা চার ভাষায় প্রচার করা হয়।

    অর্থাৎ সিয়েরা লিওনের একমাত্র অফিশিয়াল ল্যাংগুয়েজ বা সরকারি ভাষা ইংরেজি। এছাড়াও সিয়েরা লিওনে কথ্য ভাষা হিসেবে বাংলার ব্যবহারও পাওয়া যায়না।

    উল্লেখ্য বাংলাকে কোন দেশ নিজেদের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেছে এমন প্রশ্ন ৪১ এবং ৪৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় এসেছিল। নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পাঠ্যবইয়ের ‘জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ’ বিষয়ক নবম অধ্যয়ে (১৩৩তম পৃষ্টা) বাংলাকে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লেখ হয়েছিল (মুদ্রণ ২০২২)।

    সুতরাং বাংলাকে সিয়েরা লিওনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় বা সরকারি বা দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে মর্মে সামাজিক মাধ্যমে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে; তা বিভ্রান্তিকর।

    Tags

    BengalisecondofficialstatelanguageSierra LeoneMedia Watch
    Read Full Article
    Claim :   আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের সরকারি ভাষা বাংলা
    Claimed By :  Social Media Post and Media Reports
    Fact Check :  False
    Next Story
    Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors.
    Please consider supporting us by disabling your ad blocker. Please reload after ad blocker is disabled.
    X
    Or, Subscribe to receive latest news via email
    Subscribed Successfully...
    Copy HTMLHTML is copied!
    There's no data to copy!