অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভারের ভিডিওকে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানীর বলে দাবি
অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বমগার্টনারের ভিডিওকে বলা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানীর মহাকাশ থেকে ভূপৃষ্ঠে অবতরণের।
![অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভারের ভিডিওকে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানীর বলে দাবি অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভারের ভিডিওকে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানীর বলে দাবি](https://www.boombd.com/h-upload/2022/09/04/984834-austian-skydiver.webp)
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ান এক মহাকাশ বিজ্ঞানীর ভিডিও এটি, যিনি পৃথিবী থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ফুট উঁচু থেকে লাফ দিয়ে চার মিনিট পাঁচ সেকেন্ডে পৃথিবীতে পৌঁছেছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গতকাল ২৬ আগস্ট 'Raj Creations' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এমন একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী মহাকাশ থেকে 1,28000 ফুট লাফ দিয়ে 4 মিনিট 5 সেকেন্ডে 1236 কিলোমিটারের যাত্রা শেষ করে পৃথিবীতে পৌঁছেছেন। তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন পৃথিবী নড়ছে।" পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওর বর্ণনায় করা দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওর ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ান কোনো বিজ্ঞানী নন বরং অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বমগার্টনার এবং ভূপৃষ্ঠে অবতরণ করতে তাঁর ৪ মিনিট ৫ সেকেন্ড নয় বরং দশ মিনিটের কিছু কম সময় লেগেছিল।
প্রথমত,
ভিডিওর ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী নন বরং অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার।
ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম BBC এর ওয়াটারমার্ক দেখতে পাওয়া যায়। এই সূত্র ধরে সার্চ করার পর ইউটিউবে বিবিসি স্টুডিওর চ্যানেলে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ তারিখ পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওর বিবরণে বলা হয়, রেড বুল স্কাই ডাভি থেকে নেয়া ফুটেজে ফেলিক্স বমগার্টনারকে মহাকাশ থেকে ঝাঁপ দিতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি দেখুন--
সার্চ করার পর দেখা যায়, ফেলিক্স বমগার্টনার একজন বিশ্ব রেকর্ডধারী অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ও প্যারাস্যুটিস্ট। অর্থাৎ তিনি অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী নন।
দ্বিতীয়ত,
ভূপৃষ্ঠে অবতরণ করতে ফেলিক্স সময় নিয়েছিল দশ মিনিটের কিছু কম, ৪ মিনিট ৫ সেকেন্ড নয়।
কি ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর বিবিসি'তে "Skydiver Felix Baumgartner breaks sound barrier" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ফেলিক্স বায়ুস্তরের স্ট্রাটোসস্ফিয়ার স্তরে হিলিয়াম গ্যাস বেলুন থেকে ১,২৮,১০০ ফুট অর্থাৎ ৩৯.০৪ কিমি ভূপৃষ্ঠ উচ্চতা থেকে ঝাঁপ দিয়ে তিনি সুপারসনিক গতিতে নিউ মেক্সিকো শহরে অবতরণ করেছিলেন। ভূপৃষ্ঠে অবতরণ করতে ফেলিক্স সময় নিয়েছিল দশ মিনিটের কিছু কম। একই বিবরণে প্রতিবেদন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ প্রচারিত হতে দেখা গেছে। মূলত এই ঝাঁপ রেড বুল স্ট্রাটোস নামের একটি আয়োজনের অংশ ছিল। রেড বুল স্ট্রাটোস হলো রেড বুল নামের অস্ট্রিয়ান জনপ্ৰিয় এনার্জি ড্রিংকের প্রচারের উদ্দেশ্যে করা একটি পাবলিসিটি স্টান্ট। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফেলিক্স বমগার্টনারকে নিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
অর্থাৎ ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ব্যক্তি অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বমগার্টনার এবং ১,২৮,১০০ ফুট থেকে একটি ফ্রিফল জাম্প সম্পন্ন করে ভূপৃষ্ঠে অবতরণ করতে তাঁর দশ মিনিটের কিছু কম সময় লেগেছিল।
সুতরাং অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভারকে অস্ট্রেলিয়ান মহাকাশ বিজ্ঞানী দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।