সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে; কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনব্যবস্থা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত মে ‘Junaid Bin Saad’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা সরকারের শাসনব্যবস্থা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে 'ধন্যবাদ পুলিশ ভাইটিকে' বলে উল্লেখ করা হয়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন —
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বাস্তব ঘটনার নয় বরং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হয়েছে।
আলোচ্য ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে আলোচ্য ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওতে পুলিশ কর্মকর্তার পোশাকে বাংলাদেশ পুলিশের লোগোর অসামঞ্জ্যতা পাওয়া যায়। এছাড়াও পাশেই একজন সাধারণ ব্যক্তির পোষাকেও একই লোগো দেখা যায় যা সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সাধারণত এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওতে এরকম অসঙ্গতি দেখা যায়।
এছাড়াও ভিডিওর নিচের দিকে ডান পাশে 'Veo' সাইন দেখতে পাওয়া যায়। গুগল 'Veo' হলো গুগলের একটি প্রায় বাস্তবসম্মত ভিডিও জেনারেশন টুল যা গুগল ডিপমাইন্ড দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এটি টেক্সট-টু-ভিডিও জেনারেশন, ইমেজ-টু-ভিডিও জেনারেশন এবং সর্বশেষ সংস্করণ, ভিও-৩ ভিডিওর পাশাপাশি নেটিভ অডিও তৈরি করতে পারে।
পুলিশ কর্মকর্তার পোশাকে বাংলাদেশ পুলিশের লোগো ও পাশেই একজন সাধারণ ব্যক্তির পোশাকেও একই লোগোর অসঙ্গতি এবং ভিডিওর স্থিরচিত্রে 'Veo' সাইনের স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও গুগলের জেনারেটিভ টুল তাদের কন্টেন্টে 'SynthID' নামক এক ধরণের ওয়াটারমার্কিং ব্যবহার করে যা খালি চোখে দেখা না গেলেও গুগলের SynthID ডিটেকশন টুল তা শনাক্ত করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় যাচাই করলেও টুলটি ভিডিওটিকে 'গুগলের এআই টুল দিয়ে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।