সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিনজিরা হাটের অবস্থা দাবি করে একটি ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৩০ মে 'Cow lovers community of Dhaka, Bangladesh' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করে উল্লেখ্য করা হয়, “টানা দেড়দিন ধরে বৃষ্টি হওয়ার পর জিনজিরা হাটের অবস্থা।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি বাস্তব নয়। অর্থাৎ ছবিটি বাস্তব টানা দেড়দিন ধরে বৃষ্টি হওয়ার পর জিনজিরা হাটের অবস্থা নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
আলোচ্য ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে দাবি অনুযায়ী ছবিগুলো বাস্তব হওয়ার বিষয়ে কিংবা ছবির বিষয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
আলোচ্য ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছবিতে পানির মধ্যে অস্বাভাবিক রিফ্লেকশন, ছবির ফোকাস ও টেক্সচার পেইন্টিং এবং ডিজিটাল আর্টের মতো। গরু, দালান ও পানির অবস্থা একধরনের ব্রাশস্ট্রোক বা স্টাইলাইজেশন আছে। এছাড়াও, গরুর শরীরের গঠনে কিছু অসামঞ্জস্যতা আছে। যেমন- কিছু গরুর পা ও মুখ ঠিকভাবে গঠিত নয় বা অস্বাভাবিক দেখতে। দৃষ্টিপথ অনুযায়ী ভবনের সারি ও তাদের আলোকছায়া কৃত্রিম ও স্টেইজড বলে মনে হয়।
পাশাপাশি, আলোচ্য ছবিটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
পরবর্তীতে, এআই ছবি শনাক্তের টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে ছবিগুলো যাচাই করা হয়। টুলটি ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া এআই ছবি শনাক্তের আরেক টুল 'ইজ ইট এআই' ব্যবহার করেও ছবিটি যাচাই করা হয়। এই টুলটিও ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি বাস্তব নয় বরং এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “কেরানীগঞ্জের জিনজিরা হাটে গরু দেখতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়” শিরোনামে ‘এনটিভি’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২৯ মে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেই প্রতিবেদনের দৃশ্যের সঙ্গে ভাইরাল ছবিটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
সুতরাং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে বৃষ্টি হওয়ার পর জিনজিরা হাটের ছবি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।