সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ‘Alvi Chaudhary’ নামক একটি আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “আজ সকালে কুলাউড়ায় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীরা।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় যাত্রীবাহী এই বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়নি বরং এটি ইঞ্জিনের ত্রুটি থেকে বাসটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়।
ভাইরাল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ওই ভিডিওতে ‘Kulaura News - কুলাউড়া নিউজ’ এর লোগো দেওয়া আছে।
পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Kulaura News - কুলাউড়া নিউজ’ এর ফেসবুক পেইজে একটি ভিডিও পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ওই ভিডিওর সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, “কুলাউড়ায় আজ সকাল ৭:৩০ মিনিটে সওজ অফিসের সামনে হঠাৎ একটি বাসে আ'গু'ন”। ভিডিওটি দেখুন--
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে কুলাউড়া নিউজে‘র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বুম বাংলাদেশকে বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে কুলাউড়া শহরের সওজ অফিসের সামনে একটি বাসে ইঞ্জিন থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় আগুনে বাসের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
পাশাপাশি কি ওয়ার্ড সার্চ করে ‘জংশন কুলাউড়া - Junction Kulaura’ নামক একটি নিউজ ও মিডিয়া ওয়েবসাইট সম্পর্কিত পেজ থেকে একই ভিডিও পোস্ট করা হয়। যেখানে বলা হয়, “কুলাউড়ার স্টেশন চৌমুহনীতে আসুক এন্টারপ্রাইজ নামে বাসের গ্যাস লিকেজ হয়ে অ-গ্নি-কা-ণ্ড,,, ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আ-গু-ন নিয়ন্ত্রণে আনা, কোনো হ-তা-হ-তে-র খবর পাওয়া যায়নি।” ভিডিওটি দেখুন--
বিষয়টি সম্পর্কে আরো নিশ্চিত হতে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বুম বাংলাদেশকে বলেন, ব্যাটারি থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। এটা চাঁদাবাজি বা ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্নিসংযোগের কোনো ঘটনা নয় বরং দুর্ঘটনা বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
অর্থাৎ, কুলাউড়ায় চাঁদা না দেয়ায় বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। বরং দুর্ঘটনাবশত বাসটিতে এই আগুন লাগে।
সুতরাং, বাসে দুর্ঘটনাবশত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে’ দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।